UNICEF delivers critical medical supplies and support as dengue outbreak escalates among children in Bangladesh
Source:
Womeneye24.comডেঙ্গু নির্মূলে সরকারের প্রচেষ্টায় সহায়তা দিবে ইউনিসেফদেশে করোনার মতো গত কয়েক মাস ধরে ডেঙ্গুর হানায় মানুষ আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হলেও সাম্প্রতিককালে সব বয়সের মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রাণহানিও ঘটছে প্রতিদিনই। এ অবস্থায় ১৫ বছরের কম বয়সী ২১ হাজারেরও বেশি শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবরে সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি সহায়তা জোরদার করছে ইউনিসেফ। এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৫৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ইউনিসেফ জরুরিভিত্তিতে ২২ লাখ ৫০ হাজার ডলার সমমূল্যের প্রয়োজনীয় ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট ও পেশাদারদের জন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, সুপেয় পানীয়জল, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি খাতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী ও সেবা প্রদান করবে।অপরদিকে অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে মা ও তাঁর সন্তানের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঘটেছে মৃত্যুর ঘটনাও। চলতি বছরে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় জ্বর হলেই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বে যখন জলবায়ুজনিত বিপর্যয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগের বিস্তার বাড়িয়ে তুলছে, যা বড়দের পাশাপাশি সরাসরি শিশুদের জীবনেও প্রভাব ফেলছে।বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘বাংলাদেশে ডেঙ্গু সংকট বাড়তে থাকায় আরো একবার এখানকার শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির অগ্রভাগে রয়েছে।’ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখন দেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, যার প্রায় ২০ শতাংশই হলো ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু।বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, দেশে ডেঙ্গু সংকট বাড়তে থাকায় আরো একবার এখানকার শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির অগ্রভাগে রয়েছে।’এদিকে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কারণে সামনে আরো বড় বিপর্যয় আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানী ঢাকায় উচ্চ পর্যায়ের এক মতবিনিময়সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ‘ডেঙ্গু মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে বছরব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘শুধু শহর নয়, এখন গ্রাম পর্যায়েও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মশা নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে, সব শহরভিত্তিক। যত প্রচারণা হচ্ছে, সব এডিস মশা এজিপ্টি নিয়ে, যেটি শহর অঞ্চলে বেশি থাকে। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকার বাইরে যে সার্ভেগুলো হয়েছে, সব জায়গাতেই এডিস মশা এলবোপিকটাসের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে। এ ছাড়া এখন দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।’সভার শুরুতেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবিরকে প্রশ্ন করেন, ‘মশা নিধনে আপনারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। জবাবে দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য আধিকারীক বলেন, মশক নিধনের ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছি। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এডিস মশার উৎস নির্মূল করা জরুরি। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, এমনকি হাসপাতালের ভেতরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ব্যাপকভাবে এডিসের লার্ভা পেয়েছি।’ মন্ত্রী, প্রশ্ন রাখেন, মশা ও রোগী এত বাড়ছে কেন?’জবাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, জনগণ যদি সচেতন না হয় এবং সহযোগিতা না পাই, তাহলে সিটি করপোরেশন একা কিছুই করতে পারবে না।’স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এ বছর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সরকারের ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গড়ে রোগীপ্রতি ব্যয় ৫০ হাজার টাকা।’ তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে সেবা নেওয়া মোট রোগীর ৭০ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। আর ৩০ শতাংশ বেসরকারিতে। করোনার মতো এবার ডেঙ্গুতে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে।’