Research: 80% of Dhaka children have lead in their blood
Source:
sarabangla.netসাড়ে তিন কোটি শিশুর শরীরে ক্ষতিকারক সিসা সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ঢাকা: বাংলাদেশে সাড়ে তিন কোটির বেশি শিশু শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সিসা বয়ে বেড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে তাদের শরীরের সিসার পরিমাণ বেশি। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।গবেষণা বলছে, বড়দের তুলনায় শিশুদের শরীরে সিসার প্রভাব বেশি। শিশুদের রক্তে সিসা মিশে গিয়ে সারা জীবনের জন্য স্নায়ুবিক, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। মস্তিষ্ক আক্রান্ত হচ্ছে, স্মরণশক্তি কমছে, অনেক ক্ষেত্রে কোমায় চলে যাচ্ছে শিশুরা।ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) সম্প্রতি এ গবেষণা পরিচালনা করে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।গবেষণায় বলা হয়, সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত বাংলাদেশের সাড়ে তিন কোটি শিশু। লিড অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং, টার্মারিক ও রঙ কারখানা এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য পেন্সিল, কালি, খেলনা বা গহনাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ব্যবহৃত সিসা থেকে ছড়াচ্ছে এ বিষক্রিয়া।আইইডিসিআর- এর গবেষক নওরোজ আফরিন গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, টাঙ্গাইল, খুলনা, সিলেট, পটুয়াখালী- এ চার জেলার শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। এ চার জেলার পরীক্ষিত ৯৮০ শিশুর সবারই রক্তে সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রা থেকে ৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রাম বেশি। এর মধ্যে ২৪ মাস থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।আইসিডিডিআরবির করা গবেষণার তথ্য বলছে, ঢাকার ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষায় সবার শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।গবেষকরা বলছেন, ছোটবেলায় সিসার প্রভাব বুদ্ধিমত্তা কমায়, মনোযোগের ঘাটতি তৈরি করে, লেখাপড়ায় দুর্বল হয়, যা ভবিষ্যতে তাদের আগ্রাসী করে তোলে।বাজারের ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টি পণ্যে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চারটি শহরে স্থানীয়ভাবে তৈরি খেলনা, রঙ, অ্যালুমিনিয়াম ও সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, সবজি, চাল এবং মসলার নমুনায়ও সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া মাটি, ছাই, পোড়া মাটি ও হলুদের গুঁড়ায় সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে। চার শহর হলো ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা।গবেষণার তথ্য বলছে, সিসা দ্বারা দূষিত হলুদের গুঁড়া গর্ভবতী নারীর শরীরে উচ্চ মাত্রার সিসার উপস্থিতির কারণ। এসব জেলার পল্লী এলাকায় পরীক্ষা করা ৩০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর শরীরে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুজ্জামান, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েটসহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। সারাবাংলা/এসবি/আইই